জনাব আবু তাহের মাস্টার ছিলেন রুদ্ররামপুর, চাটখিল, নোয়াখালী অঞ্চলের একজন কৃতি সন্তান। বৃটিশ শাসিত তৎকালীন ভারতবর্ষে তথা রুদ্ররামপুর, চাটখিল, নোয়াখালী অঞ্চলে জন্ম গ্রহণের পর তিনি তৎকালীন সমাজের নানান রকম দৈন্যতা, অবহেলা, নীপিড়ীনের মধ্যেও নিজেকে বাবা মায়ের একজন আদর্শ সন্তান হিসেবে গড়ে তোলেন।
স্নাতক পাশের পর জনাব আবু তাহের মাস্টার অন্য সবার মত শুধুমাত্র নিজের ভরণ পোষণের জন্য তথাকথিত কোন চাকরিতে প্রবেশ করেন নি। বরং, তৎকালীন গ্রামীণ অবহেলিত সমাজকে গড়ে তোলার জন্য, মানুষের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনি নিজেকে শিক্ষকতার মত মহান পেশায় নিয়োজিত করেছেন।
তৎকালীন সময়ে জনাব আবু তাহের স্যার সমাজের বিত্তবান ও গণ্যমান্য মানুষদের সাথে নিয়ে অত্র অঞ্চলে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য কাজ শুরু করেন। ১৯৭৩ সালে স্যার অত্র অঞ্চলের প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সপ্তগাও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় গড়ে তোলেন। শুরু থেকেই তিনি কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে নিজেকে বিদ্যালয়ের উন্নতির জন্য নিয়োজিত করেন। তাঁর পরিশ্রম, সততা, বুদ্ধিমত্তায় তিনি সপ্তগাও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়কে দেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলেন।
সপ্তগাও অঞ্চলের মানুষের মাঝে যুগোপযোগী শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য জনাব আবু তাহের মাস্টার তাঁর জীবনের অর্ধেক সময় উতসর্গ করেছিলেন। তিনি প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন সপ্তগাও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং জনাব আবু তাহের মাস্টার জাতীয় পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হন। শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মর্যাদা স্বরুপ জনাব আবু তাহের মাস্টার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় রাষ্ট্রপতি ইয়াজ উদ্দিন আহমেদের হাত থেকে স্বর্ণপদক গ্রহণ করেছিলেন।
নিজের সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে জনাব আবু তাহের মাস্টার ছিলেন অত্যন্ত সৎ একজন মানুষ। তাঁর কর্মজীবনে তিনি অত্র অঞ্চলের একজন অবিভাবক হিসেবে আবির্ভূত হন।শুধুমাত্র শিক্ষা খাতে তাঁর কাজ ও আত্মত্যাগের জন্য সমগ্র নোয়াখালী জেলায় তিনি একজন শিক্ষানুরাগী সুপরিচিতি লাভ করেন। এছাড়া সমাজের উন্নতির নানা রকম সামাজিক কর্মকান্ডে তাঁর সরব উপস্থিতি ছিল।